আজ সালাতুদ দুহা পড়েছেন তো?

আজ সালাতুদ দুহা পড়েছেন তো?

এটি নফল সালাতের শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদায় দ্বিতীয়

ফরজ-ওয়াজিব নামাজের পর যেই নফল নামাজের ব্যাপারে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে তা হচ্ছে সালাতুদ দুহা বা চাশতের নামাজ। এটি সূর্যোদয়ের পর থেকে যুহরের নামাজের ওয়াক্ত হবার আগ পর্যন্ত পড়া যায়। সর্বনিম্ন ২ রাকাত থেকে শুরু করে ১২ রাকাত পর্যন্ত পড়ার ব্যাপারে হাদীস পাওয়া যায়। সালাফগণের মতে এর বেশিও পড়া যাবে। এটি অন্যান্য নফল নামাজের মতই ২ রাকাত করে পড়া উত্তম। এই নামাজের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সূরা-ক্বিরাত নাই। সূরা ফাতিহার সাথে যে কোনো সূরা দিয়েই এই নামাজ পড়া যাবে।

আমরা শবে বরাত, শবে মেরাজে সারা রাত জেগে নামাজ পড়াকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেই। যদিও এর স্বপক্ষে খুব বেশি জোড়ালো দলীল নাই। শবে বরাতের ক্ষেত্রে কিছু হাদীসে আমলের ব্যাপারে পাওয়া যায়, কিন্তু শবে মেরাজের রাত্রে কোনো বিশেষ নামাজ বা পরদিন বিশেষ রোজার ব্যাপারে হাদীসে পাওয়া যায় না। অপরপক্ষে চাশতের নামাজের গুরুত্বের উপর অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। আমরা তা আমল করি না। নিজেদের মনগড়া বিদআতের উপর আমল করাটা আসলে সহজ। শয়তান এটাকে অনেক সুন্দর করে আমাদের সামনে উপস্থাপন করে। তাই আমরা বিদআত পালনে জান দিয়ে দিই। কিন্তু সহীহ হাদীসের উপর আমল করতে গড়িমসি করি। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক-সহজ ও সুন্দর ভাবে ইসলাম বুঝার তাওফিক দান করুন। শিরক-বিদআত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন।

হযরত বুরাইদাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, “মানবদেহে ৩৬০টি গ্রন্থি আছে। প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ঐ প্রত্যেক গ্রন্থির তরফ থেকে দেয় সদকাহ্ রয়েছে।” সকলে বলল, ‘এত সদকাহ্ দিতে আর কে সক্ষম হবে, হে আল্লাহর রসূল?’ তিনি বললেন, “মসজিদ হতে কফ (ইত্যাদি নোংরা) দূর করা, পথ হতে কষ্টদায়ক বস্তু (কাঁটা-পাথর প্রভৃতি) দূর করা এক একটা সদকাহ্। যদি তাতে সক্ষম না হও তবে দুই রাকআত চাশতের নামায তোমার সে প্রয়োজন পূর্ণ করবে।” (আহমাদ, আবু দাঊদ)

হযরত উক্ববাহ্ বিন আমের জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহ আযযা অজাল্লা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! দিনের প্রথমাংশে তুমি আমার জন্য চার রাকআত নামায পড়তে অক্ষম হয়ো না, আমি তার প্রতিদানে তোমার দিনের শেষাংশের জন্য যথেষ্ট হব।” (আহমাদ, আবু য়্যালা, সহীহ তারগীব ৬৬৬ নং)

হযরত আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি চাশতের দু রাকআত নামায পড়বে সে উদাসীনদের তালিকাভুক্ত হবে না। যে ব্যক্তি চার রাকআত পড়বে সে আবেদগণের তালিকাভুক্ত হবে। যে ব্যক্তি ছয় রাকআত পড়বে তার জন্য ঐ দিনে (আল্লাহ তার অমঙ্গলের বিরুদ্ধে) যথেষ্ট হবেন। যে ব্যক্তি আট রাকআত পড়বে আল্লাহ তাকে একান্ত অনুগতদের তালিকাভুক্ত করবেন। যে ব্যক্তি বারো রাকআত পড়বে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতে একটি গৃহ্ নির্মাণ করবেন। এমন কোন দিন বা রাত্রি নেই যাতে আল্লাহর কোন অনুগ্রহ নেই; তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা দানস্বরুপ উক্ত অনুগ্রহ দান করে থাকেন। আর তাঁর যিকরে প্রেরণা দান করা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে কোন বান্দার প্রতিই করেননি।” (ত্বাবারানীর কাবীর, সহিহ তারগিব ৬৭১ নং)


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ